ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থা থেকে প্রথমে পূর্ব পাকিস্তান ও পরে মুসলমান ভাইদের নিগ্রহ থেকে রক্তের দামে মুক্তি নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়। তবে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত অনেক কিছুই আকড়ে আছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে একটি হলো ১৮৬০ সালে প্রণীত দণ্ডবিধি ৩৭৭ ধারা, যার ফলে একই লিঙ্গের যৌন কার্যকলাপকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। এই আইনে যাবজ্জীবন বা দশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং জরিমানা প্রদান করা হয়, যদিও মহিলাদের ক্ষেত্রে এই আইন প্রযোজ্য নয়, কিন্তু সামাজিক ভাবে তারাও এই আইনের ফলে নিগৃহীত হয়।
বিভিন্ন সময় এলজিবিটি সমাবেশগুলিকে লক্ষ্য করে পুলিশের বিরূপ ও অমানবিক আচরণ লক্ষ করা যায়। প্রায় প্রতিটি সময় এরা সমাবেশে উপস্থিতদের বিরুদ্ধে সমকামিতার বদলে মাদক মামলায় অভিযুক্ত করে যার কোন সুনির্দিষ্ট প্রমাণাদি থাকে না। আর এই বিষয়টি অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ভাবে করা হচ্ছে যাতে সমকামী তথা এলজিবিটিপন্তী প্রতিটি মানুষকে সমাজে স্থায়ীভাবে মাদকাসক্ত হিসাবে প্রমাণ করা যায়। এছাড়া বিভিন্ন সময় সমকামী এক্টিভিস্টদের হত্যা এবং তাদের হত্যার কোন বিচারিক কার্যক্রম না হওয়া এদেশে সমকামিতার প্রতি সামাজিক বৈরিতার প্রকোপ প্রকাশ করে। ২০১৬ সালে, বাংলাদেশে সমকামী অধিকার নিয়ে প্রকাশিত প্রথম ম্যাগাজিনের প্রতিষ্ঠাতা জুলহাস মান্নান’কে তার ঘরে ঢুকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় এবং সমাজ মৌনতার মাধ্যমে এই হত্যাকে সমর্থন জানায়, একই অবস্থান রাষ্ট্রেরও – কারন আইনের ৩৭৭ ধারা অনুযায়ী সমকামিতা শাস্তিযোগ্য অপরাধ কিন্তু খুন হত্যা কি অপরাধ নয়? সমাজ একরকম সমকামী তথা ভিন্নমতকে টুটি ছেপে রাখার বৈধতা দিয়ে রেখেছে কারণ সংখ্যায় আদিখ্যের মুসলমানদের ধর্মে এসব হারাম – তাই রাষ্ট্রযন্ত্র এখানে চুপ করে সং্খ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার বিসর্জন দিয়ে ধর্মভীরু রীতি অনুসরণ করে।
পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে ২০০৯ সালে, হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে সমকামীতাকে আপরাধ নয় বলে ঘোষণা দেয়া হয় একই সাথে সমকামীদের অধিকার প্রতিষ্টার পথ প্রশস্ত করে দেয়া হয়। অন্যদিকে এদেশে ঔপনিবেশিক শাসনামলের আইনের ধারা ৩৭৭ অক্ষুণ্ণ রেখে রাষ্ট্র সমকামীদের অধিকার ক্ষুণ্ণ করে ইসলামী পারপাস সার্ভ করে যাচ্ছে। রাজনীতিবিদরা প্রায়শই এলজিবিটিকিউ+ বিরোধী বক্তব্য সমর্থন করে বিবৃতি দেন। যার মূল উদ্দেশ্য তাদের ভোটব্যাংক ধরে রাখা কিন্তু এরফলে সমকামীদের জীবন সর্বক্ষণ ঝুঁকির মধ্যে নিমজ্জিত থাকে। যার প্রমাণ পাওয়া যায় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে – যেখানে LGBTQ+ ব্যক্তিরা পরিচয় গোপন রেখে তাদের ভয় ও বিচ্ছিন্নতার জীবনের কষ্টের কথা লিখে পোস্ট করেন।
একটি মানবাধিকার আবেদনে ধারা ৩৭৭ বাতিলের আহবান জানানো হয়েছে কিন্তু সরকার অসাংবিধানিকভাবে ‘সাংবিধানিক এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক’ কারণ দেখিয়ে ধারাবাহিকভাবে তা প্রত্যাখ্যান করে যাচ্ছে। রাষ্ট্রযন্ত্র এই আইনের ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের মানবাধিকারকে ক্ষুণ্ণ করে, রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে যাচ্ছে। যার ফলে যখন-তখন, যাকে-তাকে, সামাজিক কলঙ্ক লেপে রাজনৈতিক শত্রুতা ও চরমপন্থী সহিংসতা বাজায় রাখার পরিবেশ বৈধতা পেয়ে যাচ্ছে। সমকামিতার মত একটি স্বাভাবিক ব্যাপারকে বেআইনি করে রাখার মাধ্যমে এই ব্যাপারে সামাজিক আলোচনা ও সচেতনতা সৃষ্টির সব পথ রাষ্ট্রীয়ভাবে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। মানবাধিকারের পূর্ন প্রতিষ্ঠা, চরমপন্থী ধর্মীয় সহিংসতা ও গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক চর্চার নিমিত্তে সমকামিতা বিরোধী এই ঔপনিবেশিক আইনটি বাংলাদেশে বাতিল ঘোষণা করতে হবে।
40 Responses
একজন সংখ্যালঘুর কষ্টের কথা শুনে কষ্ট পেলাম।
তুই একটা নাস্তিক কুকুর, তোর জন্যই দেশে সমস্যা।
সব ধর্মেই সমস্যা আছে, শুধু ইসলামকে দোষ দেওয়া ঠিক না।
তোর মত মানুষদের জন্যই দেশে অশান্তি।
তোকে নিয়ে রাস্তায় পোস্টার লাগানো উচিত।
নাস্তিক কোথাকার, মুখ বন্ধ কর।
আপনার দৃষ্টিভঙ্গি সত্যিই অনুপ্রেরণামূলক।
এটা বলা সহজ নয়, আপনি খুব সাহস দেখিয়েছেন।
ধর্ম নিয়ে এমন সাহসী লেখা আগে দেখিনি।
বাংলাদেশে অনেক মুসলমান সহনশীল, তাদের কথা বলেন না কেন?
আপনি অন্য ধর্মের প্রতি এমনটা লিখতেন?
তোর মাথায় গোবর ভর্তি।
তোকে দেশ থেকে বের করে দেওয়া উচিত।
আপনার বক্তব্য কিছুটা উস্কানিমূলক।
সব ধর্মের উপর প্রশ্ন তোলা দরকার, অসাধারণ বিশ্লেষণ।
তোর মত লোকদের গুলি করা উচিত।
আপনার অভিজ্ঞতা জানা আমাদের চোখ খুলে দিল।
এই ধরনের লেখা দেশের জন্য ক্ষতিকর।
তুই মুসলমানদের শত্রু, সাবধানে থাকিস।
খুব ভালোভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এই সব কথা বলে দালালি করছিস কার?
তুই জাত শত্রু।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া উচিত না।
এই লেখাটা পড়ে আমি অনেক কিছু শিখেছি।
এই লেখাটা আমাকে অনেক ভাবতে বাধ্য করলো।
আপনার চিন্তাধারা সত্যিই অসাধারণ।
একতরফা দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিচার ঠিক নয়।
সবাইকে এই লেখা পড়া উচিত।
খুব সাহসী লেখা, আপনার মতামতের সঙ্গে একমত।
আপনার লেখায় কিছুটা রাগ মিশে গেছে মনে হচ্ছে।
তোর মত লোকদের জন্য দেশ নষ্ট হচ্ছে।
তুই মর, তোকে কেউ সহ্য করতে পারে না।
বিষয়টা এতদিন পর কেউ বলেছে দেখে ভালো লাগলো।
এই লেখাটা আরও নিরপেক্ষ হওয়া উচিত ছিল।
আপনার বক্তব্য অনেক একপেশে।
ধর্ম নিয়ে কথা বলবি না, কুকুর!
আপনার কথাগুলো খুবই বিভাজনমূলক শোনাচ্ছে।
আমার নিজের অভিজ্ঞতার সাথেও এই লেখা মিলে গেছে।
তথ্যভিত্তিক লেখা হলে আরও গ্রহণযোগ্য হতো।
সংখ্যালঘুদের নিয়ে এমন লেখা সত্যিই দরকার ছিল।